Free ArticlesLife Science-জীববিজ্ঞানScience News-বিজ্ঞানের টুকরো খবর

সরীসৃপ সংবাদ – ১

Brookesia nana | Image courtesy: sciencenews.org

উত্তর মালাগাসি অরণ্যের পাতার আড়ালে লুকিয়ে থাকে এক প্রকার ছোট গিরগিটি। এতই ছোট যে এটি দিব্বি আপনার আঙুলের ডগাতে আরামে উঠে বসতে পারে।কারণ নাক থেকে লেজ পর্যন্ত লম্বায় এই গিরগিটি মাত্র ৩০ মি.মি। প্রাণীটির বৈজ্ঞানিক নাম ‘ব্রুকেশিয়া নানা’। গবেষকরা জানিয়েছেন এই প্রজাতির টিকটিকিই এখনও পর্যন্ত আবিষ্কৃত বিশ্বের ক্ষুদ্রতম সরীসৃপ। ২৮ জানুয়ারি সায়েন্টিফিক রিপোর্টে এই সংবাদ প্রকাশিত হয়।

ব্রুকেশিয়া নানা-র দৈহিক বৈশিষ্ট্য

এই প্রজাতির কেবলমাত্র ১ জোড়া দৃষ্টান্তই আবিষ্কৃত হয়েছে। স্ত্রী গিরগিটির দৈর্ঘ্য ২৮.৯ মি.মি আর পুরুষ গিরগিটির দৈর্ঘ্য ২১.৬ মি.মি। দৈহিক আকারের এই পার্থক্যের কারণে পুরুষ গিরগিটির জননাঙ্গ তার শরীরের মোট দৈর্ঘ্যের প্রায় ২০ শতাংশ, যা তার স্ত্রী সাথীর জন্য যথেষ্ট উপযুক্ত – মিউনিখ শহরের বাভারিয়ান স্টেট কালেকশন অফ জুলজি’র (Bavarian State Collection of Zoology) সরীসৃপ-বিশেষজ্ঞ (herpetologist) ফ্র্যাঙ্ক গ্ল্য (Frank Glaw) এবং তাঁর সহকর্মীরা এমনটাই ধারণা করেছেন।

ব্রুকেশিয়া নানা-র এহেন নামকরনের উদ্দেশ্য
এই ক্ষুদ্র আকৃতির জন্যই এর নাম দেওয়া হয় B. nana, ‘nana’ অর্থাৎ ‘nano’। বি. নানা (Brookesia nana) প্রজাতির এই গিরগিটি যে বিশেষ গণের অন্তর্ভুক্ত, সেই গণের অন্তর্গত আরো ১৩টি ক্ষুদ্রাকৃতি গিরগিটি প্রজাতি উত্তর মাদাগাস্কারের বিস্তৃত পার্বত্য অরণ্যে পাওয়া যায়।

কেন এই বি.নানা আর তার সমগোত্রীয়রা এত ক্ষুদ্রাকৃতি হয়ে থাকে তা সত্যই রহস্যজনক। যদিও এই ক্ষুদ্র আকার তাদের কিছু বিশেষ সুবিধা দেয়। যেমন এই ছোট গিরগিটিরা তাদের জিভ খুব দ্রুত ব্যবহার করে শিকার করার ক্ষমতা রাখে।

গ্ল্য এবং তাঁর গবেষক দল অনুমান করেন যে এই ব্রুকেশিয়া গণের গিরগিটিরা দিনের বেলায় জঙ্গলের মাটিতে ঘুরে বেড়ায়, পোকামাকড় ধরে খায় আর রাত্রে নিরাপত্তার জন্য কোনো ঘাস বা ছোট গাছের ডগায় উঠে বসে থাকে।

ব্রুকেশিয়া নানা-র ভবিষ্যৎ

যথেচ্ছভাবে অরণ্যধ্বংস আর প্রাণীকুলের স্থানাভাবের কারণে এই দুষ্প্রাপ্য প্রজাতির গিরগিটি বি.নানা-র ভবিষ্যৎ অনিশ্চিৎ করে তুলেছে বলে গবেষকরা মনে করেন। যদিও যে অঞ্চলে এই প্রজাতির গিরগিটিদের দেখা মিলেছে, সেই অঞ্চলকে মালাগাসি সরকার বিশেষভাবে সুরক্ষিত করেছে। খুব শীঘ্রই আন্তর্জাতিক পরিবেশ সংরক্ষণ সংস্থা (International Union for Conservation of Nature) এই বিশেষ সরীসৃপ প্রজাতির গিরগিটিকে চরম সঙ্কটাপন্ন প্রজাতির তালিকাভুক্ত করতে চলেছে।