‘আর এন এ’ নিয়ে গবেষনা করেছেন শুভেন্দ্র নাথ ভট্টাচার্য্য
শুভেন্দ্র নাথ ভট্টাচার্য্য - 'আর এন এ' নিয়ে গবেষনা করেছেন যে বাঙালি বৈজ্ঞানিক
সায়ন দাশ
বাঙালির কাছে শুভেন্দ্র নাথ ভট্টাচার্য্য একটি বিশেষ নাম। শুভেন্দ্র নাথ ভট্টাচার্য্য তাঁর সর্বতোমুখী প্রতিভা, জ্ঞানের গভীরতায় নিজেকে বিশেষ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছেন। তিনি একই সাথে অনুবিক জীববিজ্ঞানিক এবং জিন গত ত্বত্ত ও জিন এর ওপর অপর জিনের প্রভাব বিষয়ে তিনি গবেষক। এছাড়াও তিনি প্রধান গবেষক ” ইন্ডিয়ান ইনসটিটিউট অফ কেমিক্যাল বায়োলজি ” তে।
জন্ম ও বাল্যকাল
শুভেন্দ্র নাথ ভট্টাচর্য্য এর জন্ম ৪ ঠা অক্টোবর ১৯৭৫। পশ্চিম বঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার এক ছোট শহর ‘ হারিনাভি ‘ তে জন্ম হয় বাংলার এই উজ্জ্বল নক্ষত্রের। ‘ হারিনাভি ডি ভি এস হাইস্কুল ‘ থেকে স্কুল এর পাঠক্রম শেষ করেন।
উচ্চশিক্ষা এবং অধ্যয়ন
নিজের অধ্যয়ন এবং গবেষণা করার প্রচেষ্টা কে সাফল্যমণ্ডিত করতে তিনি ক্যালকাটা ইউনিভার্সিটি থেকে মাস্টার্স করেন এবং যাদবপুর ইউনিভার্সিটি থেকে পি এচ ডি শেষ করে তিনি ‘ ইন্ডিয়ান ইনসটিটিউট অফ কেমিক্যাল বায়োলজি ‘ তে গবেষণায় যোগদান করেন।১৯৯৮ সাল থেকে ২০০৩ সাল অবধি গবেষনা করার পর তিনি ‘ ফেড্রিক মেসচর ইনস্টিটিউট ওফ বায়োমেডিক্যাল রিসার্চ ‘ এ তার পরবর্তী ডক্টরেট করার জন্য যোগদান করেন। ২০০৪ থেকে ২০০৮ সাল অবধি সুইজারল্যান্ড অধ্যয়ন করার পর তিনি নিজের দেশে ফেরেন। নিজের অতুলনীয় জ্ঞানের পরিধি ক আরো প্রস্থারিত করতে এবং নিজের দেশের হয়ে বিজ্ঞানে তার অবদান ক আরো সুফলমন্দিত করতে তিনি ২০০৮ সালে ” ইন্ডিয়ান ইনসটিটিউট অফ কেমিক্যাল বায়োলজি ” তে যোগদান করেন। ‘ আর এন এ রিসার্চ ল্যাব্রটরির ‘ প্রধান নিরীক্ষক পদে তিনি বহু বছর বহু গবেষনা ও নিরীক্ষা করেছেন।
গবেষনা ও অনুসিদ্ধান্ত
শুভেন্দ্র নাথ ভট্টাচর্য্য তার জীবনের অধ্যয়ন ও পরিশ্রম ‘ আর এন এ ‘ জনিত জিন গত রোগ এর ওপর গবেষণায় নিয়োজিত করেছেন। ‘কালা জর’ নামক মারণ রোগ যা সম্পূর্ণ জিনগত তার ওষুধের ও তার প্রাকৃতিক গুণাবলী ও তাদের রোগ নিরাময়ে ব্যপুল সাহায্য করেছেন। এছাড়াও তিনি ‘ এম আর এন এ’ বা ‘ মাইক্রো আর এন এ ‘এর বিশেষ ব্যাবহার ও তার শরীরের ওপর প্রভাব , কান্সার সেল এর নিরাময়ে বিষয়ক গবেষনায় তার বিশেষ অবদান রয়েছে। এছাড়া ও তার বহু প্রতিবেদন ও অনুসিদ্ধান্ত আছে। অনুবিক মাইক্রো বাওলজি তে তার এই বিশেষ জ্ঞানের জন্য তিনি ‘ ডিপার্টমেন্ট অফ বায়োটেকনোলজি ‘ এর নিউরো বাওলজি এর টাস্ক ফোর্সের সদস্য। তার গবেষনা একদিকে যেমন মানব জাতির কল্যাণ করেছে তেমনি তার অনুসিদ্ধান্ত পরবর্তী প্রজন্ম কে গবেনোষার ভীত গড়েছেন।
পুরস্কার ও প্রাপ্তি
শুভেন্দ্র নাথ ভট্টাচর্য্য 2004 সালে ‘ এ এ এ এস – জ ই হেলথ ক্যার ‘ – এর তরুণ বিজ্ঞানী পুরস্কার পান। একই বছর তিনি ভারতীয় জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমির তরুণ বিজ্ঞানী পুরস্কারও পান । হিউম্যান ফ্রন্টিয়ার সায়েন্স প্রোগ্রাম অর্গানাইজেশন তাকে ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট অ্যাওয়ার্ড প্রদান করে এবং তিনি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের স্বর্ণজয়ন্তী ফেলোশিপের জন্য নির্বাচিত হন । উভয় সম্মানই ২০০৮ সালে তিনি পেয়েছিলেন। তিনি জাতীয় জীববিজ্ঞান পুরস্কার পান।
বায়োটেকনোলজি বিভাগের ক্যারিয়ার উন্নয়নের জন্য পুরস্কার এবং ২০১৫ সালে এলসেভিয়ার এবং ন্যাশনাল একাডেমি অফ সায়েন্সেস, ভারতের না সি–স্কোপাস ইয়াং সায়েন্টিস্ট অ্যাওয়ার্ড ।
কাউন্সিল অফ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ ভট্টাচার্যকে ভূষিত করেছে, যিনি ২০১৬ সালের অধ্যাপক বি কে বাছাওয়াত মেমোরিয়াল ট্রাভেল অ্যাওয়ার্ডের প্রাপক, শান্তি স্বরূপ ভাটনগর পুরস্কার , ২০১৬ সালে সর্বোচ্চ ভারতীয় বিজ্ঞান পুরস্কারগুলির মধ্যে একটি। তিনি আধুনিক ভারতের ১২ জন তরুণ অর্জনকারীদের মধ্যে একজন ছিলেন এবং ২০১৬ সালের শুলিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যালেন্ডারে স্থান পান । এছাড়া ও তিনি বিভিন্ন সুপরিচিত বিজ্ঞানী ও গবেষক দের সমন্বয় সাইন্স আর্টিকেল প্রকাশ করেন তাদের মধ্যে বিশেষ কিছু গুরুত্বপূর্ণ হলোঃ-
- “ইনসুলিনের মতো গ্রোথ ফ্যাক্টর–১ প্রতিবেশী কোষে ‘ এম আই আর – ১১২‘ উৎপাদনকে বাধা দেয় যাতে মানুষের হেপাটোমা কোষের বিস্তার নিশ্চিত করতে এর আন্তঃকোষীয় স্থানান্তর কমাতে পারে”
- “স্তন্যপায়ী নিউরনের ডেনড্রাইটে বিশেষায়িত পি–বডির মতো গঠন থাকে যা নিউরোনাল অ্যাক্টিভেশনে সাড়া দেয়”
- “পুরুষ জীবাণু কোষের ক্রোমাটয়েড বডি: প্রক্রিয়াকরণ সংস্থার সাথে মিল এবং ডিসার এবং মাইক্রোআরএনএ পাথওয়ে উপাদানগুলির উপস্থিতি”
- “মানব কোষে মাইক্রোআরএনএ রিপ্রেশন এবং এমআরএনএ পি–বডি স্থানীয়করণের স্ট্রেস–প্ররোচিত বিপরীতমুখী“।
উপসংহার
শুভেন্দ্র নাথ ভট্টাচর্য্য বাংলা তথা ভারতের বিজ্ঞানের উজ্জল নক্ষত্র । শুভেন্দ্র নাথ ভট্টাচর্য্য এর দ্বারা বিভিন্ন রোগ নিরাময় সম্ভব হয়ছে, রোগের প্রকোপ থেকে মুক্তি পেয়েছেন বহু রুগী।আধুনিক অনুবিক জীববিজ্ঞান ও আরো প্রশস্ত হয়ছে তার অপরিসীম প্রচেষ্টা ও কর্মে। তিনি ভারতবর্ষের যুবসমাজ এর অনুপ্রেরণা ।জীববিজ্ঞানে তার অবদান ও গবেষণা এবং অভিজ্ঞতা নতুন প্রজন্মের বিজ্ঞানীদের এগিয়ে নিয়ে যাবে এক নতুন বিজ্ঞানের পথে যেখানে জীববিজ্ঞানে আমাদের জ্ঞানের পরিধি আরো প্রসারিত হবে।