Astronomy-জ্যোতির্বিজ্ঞানFree ArticlesPopular Science-জনপ্রিয় বিজ্ঞান

সূর্যের কিরীটমন্ডল

Sun-Corona

খেতে বসে ভাতের থালায় ঢেলে দেওয়া সদ্য নামানো ধোঁয়া ওঠা গরম ভাত; তাতে হাত দেওয়া মুশকিল, থালাও বেশ গরম। কিছুটা দূরে রাখা জলের গ্লাস ঠান্ডা। তাইতো আমাদের দৈনন্দিন অভিজ্ঞতা, তাইতো আমরা অনুভব করি। ঘরে জ্বলন্ত বাল্বের গায়ে হাত দিলে ছ্যাঁকা লাগে, কিন্তু ঘরের ভিতর বসে আমাদের চামড়া পুড়ে যায় না। সবসময়ে এটাই ঘটে, আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এর অন্যথা হয় না।

কিন্তু সূর্যের কিরীটমন্ডলে (Corona) ঘটছে তার উল্টোটা। সূর্যের আলোকমণ্ডলের (Photosphere) তাপমাত্রা মোটামুটিভাবে ৫৭৭২ কেলভিন। অথচ আলোকমণ্ডল থেকে দূরে কিরীট মন্ডলের তাপমাত্রা দশ থেকে কুড়ি লক্ষ (১০-২০,০০,০০০), কোথাও কোথাও পঞ্চাশ ষাট লক্ষ (৫০-৬০,০০,০০০) কেলভিন। একেবারে স্থান বিশেষে এক কোটি (১,,০০,০০০,০০) কেলভিনও হতে পারে, হয়ও। বোঝাই যায়, কিরীটমন্ডলের তুলনায় আলোকমণ্ডল শীতল। তাহলে আলোকমণ্ডল থেকে কিরীটমন্ডলের দিকে তাপ চলেছে শীতল অঞ্চল থেকে তপ্ত অঞ্চলের দিকে। কেন এমন হয় তা এক রহস্য। নানাভাবে এর ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।

কিরীটমন্ডল হল সূর্যের একেবারের বাইরের দিক, তার পরেই মহাশূন্যের শূন্যতা, যার তাপমাত্রা শীতল অতি শীতল। কেবলমাত্র পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের সময় চাঁদের আড়ালে ঢাকা পড়া কৃষ্ণবর্ণ সূর্যের চারদিকে বড়জোর মিনিট দুই-তিন দেখা যায় অপরূপ উজ্জল শ্বেতবর্ণের কিরীটমন্ডল। অন্য সময় দেখা যায় না। এখন অবশ্য বিজ্ঞানীরা করোনোগ্রাফ নামের যন্ত্র আবিষ্কার করেছেন, যার সাহায্যে যে কোনো জায়গা থেকে যে কোনো সময়ে কৃত্রিম সূর্যগ্রহণ সৃষ্টি করে কিরীটমন্ডল পর্যবেক্ষণ করা যায়।

করোনোগ্রাফ যন্ত্র (Coronagraph)

আমরা দিনের বেলা খালি চোখে যা দেখি, তা হল সূর্যের আলোকমণ্ডল – তীব্র তেজোদীপ্ত অত্যুজ্জ্বল যার আড়ালে ঢাকা পড়ে থাকে কিরীটমন্ডল। সূর্য থেকে নির্গত হিলিয়াম হাইড্রোজেন এবং অন্যান্য আয়নিত কণিকার প্লাজমা প্রবাহ, আলোক এবং অন্যান্য তড়িৎচুম্বক তরঙ্গ, নিউট্রিনো ইত্যাদি তীব্রবেগে ছড়িয়ে পড়ছে চারপাশের মহাশূন্যে। আবার সূর্যের প্রবল অভিকর্ষের টানে চারপাশের মহাশূন্য থেকে উল্কা ও ধুমকেতুর টুকরো, মহাজাগতিক ধুলিকণা সূর্যের অন্দরে প্রবেশ করছে, সেও এই কিরীটমন্ডল ভেদ করে।

আলোকমন্ডলের তাপমাত্রা মাত্র ছয় হাজার কেলভিনের বেশী নয়; কিরীটমন্ডলের তাপমাত্রা কয়েক লক্ষ কেলভিন, এমনকি আলোকমণ্ডল ও কিরীটমন্ডলের মাঝে থাকা বর্ণমন্ডলের তাপমাত্রা কুড়ি পঁচিশ হাজার কেলভিন। তাহলে কিরীটমন্ডল বা বর্ণমন্ডল আমরা দেখতে পাই না কেন? তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে এক্ষেত্রে ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধির কথা, সেটাই পদার্থের সাধারণ ধর্ম। অর্থাৎ আলোকমণ্ডলের পরিবর্তে কিরীটমন্ডল ও বর্ণমন্ডল দেখতে পাওয়ার কথা। তা আমরা দেখতে পাইনা। আসলে কিরীটমন্ডল বা বর্ণমন্ডল আলোকমন্ডলের তুলনায় অত্যন্ত লঘু। যেমন আলোকমন্ডলের তুলনায় কিরীটমন্ডল প্রায় কয়েক লক্ষ থেকে কোটি ভাগ লঘু। এজন্য অণুগুলি উজ্জ্বল হয়ে উঠলেও সামগ্রিক ভাবে আলোকমন্ডলের বা বর্ণমন্ডলের উজ্জ্বলতা আলোকমণ্ডলের চেয়ে বেশী হয়না। তাই খালি চোখে কিরীটমন্ডল বা বর্ণমন্ডল দেখতে পাওয়া যায় না।

ঊনবিংশ শতাব্দী পর্যন্ত সূর্যের কিরীটমন্ডলে তাপমাত্রা বৃদ্ধির বিষয়টি মানুষের কাছে একেবারেই অজানা ছিল। পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ পর্যবেক্ষণ করে ১৭২৪ সালে গিওকোমো মারাল্ডি বুঝেছিলেন পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহনের সময় সূর্যের চারদিকে যে জ্যোতি দেখা যায় তা সূর্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ, চাঁদের অংশ নয়। কিন্তু তাপমাত্রা বৃদ্ধির বিষয়টি নজরে আসতে দীর্ঘ সময় লেগে গিয়েছিল।

ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যে বর্ণালীবীক্ষণ যন্ত্রের অভূতপূর্ব উন্নতি ঘটেছিল এবং বিজ্ঞানীরা পরীক্ষাগারে অসংখ্য ধরনের অণু-পরমাণুর বর্ণালী পরীক্ষা ও বিশ্লেষণ করেছিলেন। জোসেফ ফ্রানহফার সূর্যের বর্ণালী নিয়ে বিস্তারিত পর্যবেক্ষণ করেছিলেন। এভাবে বর্ণালীর এক বিপুল তথ্যভান্ডার গড়ে উঠেছিল। ইতিমধ্যে বিজ্ঞানী মেঘনাদ সাহা তাঁর বিখ্যাত গ্যাস আয়নন তত্ত্বের সাহায্যে সূর্যের বর্ণালীর গঠন ও তার ব্যাখ্যা দিলেন। পৃথিবীতে বসে বর্ণালীবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে সূর্যের ও অন্যান্য নক্ষত্র ইত্যাদির তাপমাত্রা ও উপাদান নির্ণয় করা যে সম্ভব তা স্পষ্ট হল।

১৮৬৯ সালের পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহনের সময় চার্লস অগাস্টাস ইয়ং এবং উইলিয়াম হার্পনেস পৃথক পৃথকভাবে সুর্যের কিরীটমন্ডলের বর্ণালীতে ৫৩০.৩ ন্যানোমিটার তরঙ্গদৈর্ঘ্যের সবুজ রেখা দেখতে পেয়েছিলেন। এটা আগে কেউ কোনোদিন দেখেননি, পরীক্ষাগারেও কোনো পদার্থের অণু-পরমাণুর বর্ণালীতে দেখা যায়নি। সুতরাং ধারণা করা হয়েছিল বর্ণালীর এই নতুন সবুজ রেখাটি কিরীটমন্ডলে নতুন কোনো মৌলিক পদার্থের উপস্থিতির জন্য দেখা গিয়েছে। এর নাম দেওয়া হয়েছিল ‘ করোনিয়াম ‘। কিন্তু তা কেমন পদার্থ ? দিমিত্রি মেন্ডেলিয়েভ বললেন এটি হাইড্রোজেনের চাইতে হালকা এক মৌলিক পদার্থ, পারমানবিক গুরুত্ব হাইড্রোজেনের চেয়ে কম। তাহলে মৌলিক পদার্থের পর্যায় সারণীতে এর অবস্থান কোথায় হবে? নানা প্রশ্নের মধ্যে করোনিয়াম গ্রহণযোগ্য হল না। বিষয়টা অমীমাংসিত রয়ে গেল দীর্ঘদিন।

বর্ণালী সম্পর্কে ওয়ালটার গ্রোট্রিয়ান-এর ১৯৩৯ সালের বিস্তারিত পরীক্ষানিরীক্ষার উপর ভিত্তি করে ১৯৪০ সালে বেংট এডলেন কিরীটমন্ডলের বর্ণালীর ঐ সবুজ রেখাটিকে অতি উচ্চমাত্রায় আয়নিত আয়রণ-এর (Fe+13) আয়নের বর্ণালীর রেখা বলে সনাক্ত করলেন। আয়রণ পরমাণু থেকে ১৩টি ইলেক্ট্রন বার হয়ে গেলে এই আয়নটি উৎপন্ন৷ হয়। আরো একটি রেখা সনাক্ত হল, Fe+9 এর লাল রঙের রেখা। এরকম আয়নিত নিকেল-এর অণুরও সন্ধান মিলল। বোঝা গেল, সূর্যের কিরীটমন্ডলে আয়রণ, নিকেলের মত ভারী ধাতুর উচ্চমাত্রায় আয়নিত পরমাণু রয়েছে। আয়রণ এরকম উচ্চমাত্রার আয়নে পরিণত হয় কেবলমাত্র অতি উচ্চ তাপমাত্রায়, যা সূর্যের বর্ণমন্ডল বা আলোকমণ্ডলের বহুগুণ বেশী। এইভাবেই কিরীটমন্ডলের অতি উচ্চ তাপমাত্রার অস্তিত্ব প্রমাণিত হয়েছে।

উথাল পাথাল টগবগ করে ফুটছে সূর্যের আলোকমণ্ডল। নীচের থেকে তপ্ত প্লাজমা উঠে আসছে আলোকমণ্ডলে। উপরে এসে শীতল হয়ে ভারী হয়ে নীচে নেমে যাচ্ছে, ফুটন্ত ভাতের হাঁড়িতে যেমন হয়। নীচ থেকে তপ্ত প্লাজমা, মূলত হাইড্রোজেন ও হিলিয়ামের প্লাজমা, উপরে উঠে শূন্যস্থান পূরণ করছে। তৈরী হচ্ছে বিশাল বিশাল সব বুদ্বুদ মহাবুদ্বুদ (Granules / Super Granules)। এক একটি মহাবুদ্বুদের আকার এতোটাই বিশাল হয় যে, তার মধ্যে দিয়ে অনায়াসে গলে যেতে পারে আস্ত পৃথিবী। সেগুলোও আলোকমণ্ডলে কিছুক্ষণ থেকে পাশে সরে যেতে থাকে আর সেই জায়গায় দেখা দেয় বুদ্বুদ বা মহাবুদ্বুদ।

কিন্তু এভাবে বিপুল তাপ পরিবাহিত হয়ে কিরীটমন্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে না। এই প্রক্রিয়া আলোকমণ্ডলের তাপমাত্রা একটা সীমার মধ্যে বেঁধে রাখতে সহায়তা করে – আলোকমন্ডলের নীচের দিকে, সূর্যপৃষ্ঠে আলোকমন্ডলের তলদেশের তাপমাত্রা ছয় হাজার ছয়শত কেলভিন (৬৬০০) এবং আলোকমন্ডলের শেষে মাত্র চার হাজার চারশো কেলভিন (৪৪০০)। এটিই হল সূর্যপৃষ্ঠের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। অবশ্য সৌরকলঙ্কের মাঝখানে তাপমাত্রা আরো কম। তাপমাত্রা এতোটা কমে যায় বলে ভ্রাম্যমান আয়নগুলির সঙ্গে মুক্ত ইলেক্ট্রন যুক্ত হয়ে আলোকমণ্ডলে হাইড্রোজেন হিলিয়াম কার্বন নিয়ন আয়রন ইত্যাদির অণু-পরমাণু এবং আয়ন দেখা দেয়।

কিন্তু সূর্যপৃষ্ঠে বুদ্বুদ এবং মহাবুদ্বুদ ছাড়াও প্রায় প্রতিমুহূর্তে ঘটছে ভয়ঙ্কর শক্তিশালী সব বিষ্ফোরণ। এইসব বিষ্ফোরণের ফলে বিশাল বিশাল সব সুদীর্ঘ অগ্নিশিখা উৎক্ষিপ্ত হচ্ছে আলোকমন্ডলের বুক চিরে মহাশূন্যের দিকে। এগুলি সৌরশিখা (Solar Flair)। সাধারণ সময়ে খালি চোখে এগুলো দেখা যায় না; দেখার চেষ্টা করাও উচিত নয়। আমরা ভালো করেই জানি, এতে চোখ নষ্টের সমূহ সম্ভাবনা। তবে পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের সময় উপযুক্ত ফিল্টারের ভিতর দিয়ে সূর্যের কিনারায় স্পষ্টভাবে দেখা যায় সৌরশিখা,কখনো রক্তবর্ণ এক আংটার মত, কখনো মহাশূন্যে বিস্তৃত লাল অগ্নিশিখার মত। কিরীটমন্ডল বা বর্ণমন্ডল উত্তপ্ত করার পিছনে এই সৌরশিখার অবদান রয়েছে বলে মনে করা হয়।

আলোকমণ্ডলের তুলনায় কিরীটমন্ডলের ঘনত্ব অত্যন্ত লঘু, একথা আগেই উল্লেখ করা হয়েছে। বাইরের মহাশূন্যও অতি শীতল। বর্ণমন্ডল ভেদ করে কিরীটমন্ডলে প্রবেশের পথ পাড়ি দিতে দিতে উৎক্ষিপ্ত সৌরশিখার তাপমাত্রা ক্রমাগত হ্রাস পাওয়ার কথা। কিন্তু তা হয়না। বর্ণমন্ডল থেকে কিরীটমন্ডলে ক্রমাগত তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে থাকে। অর্থাৎ আমাদের জানাচেনা পদ্ধতিতে তাপ কিরীটমন্ডল পর্যন্ত পৌঁছে যাচ্ছে না। কেউ যেন সিন্দুকে ভরে তাপ এনে ফেলছে কিরীটমন্ডলে।

কিরীটমন্ডলের সঙ্গে আলোকমন্ডলের আর একটা গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য রয়েছে। আলোকমন্ডল যেন অতি তপ্ত গ্যাস, আয়ন এবং প্লাজমার মিশ্রণ; কিন্তু কিরীটমন্ডল গ্যাসীয় নয় মোটেই, তার উপাদান প্রধানত প্লাজমা। এখানে পদার্থের চতুর্থ অবস্থা প্লাজমা বিরাজমান।

সূর্যপৃষ্ঠ থেকে ঊর্দ্ধে ধাবিত হওয়া চৌম্বক বলরেখার মধ্যে আবদ্ধ শক্তি (Magnetic Reconnection)

সৌরশিখাগুলির পাদদেশ, পৃথক পৃথক চৌম্বকমেরুর হয়ে থাকে। সূর্যপৃষ্ঠের উপর কোনো সৌরশিখার পাদদেশ যদি স্থানীয়ভাবে উত্তরমেরু হয়, তাহলে ঊর্ধ্বে উৎক্ষিপ্ত হয়েও ঐ সৌরশিখা সূর্যপৃষ্ঠের উপর কাছাকাছি দক্ষিণ মেরুতে ফিরে আসে খিলানের মত এক বক্রপথে; অথবা সৌরশিখাটি সূর্যের একেবারে বাইরে পাড়ি জমায়। এই প্রক্রিয়ায় চৌম্বক বলরেখার মধ্যে শক্তি আবদ্ধ হয়ে সূর্যপৃষ্ঠ থেকে ঊর্দ্ধে ধাবিত হয়। চৌম্বক বলরেখাগুলিও পুনরায় নতুনভাবে নিজেদের সাজিয়ে নেয়। মুক্ত হয় চৌম্বক ক্ষেত্রে আবদ্ধ শক্তি (Magnetic Reconnection)। আর এই শক্তিই উত্তপ্ত করে তোলে কিরীটমন্ডল।

অণু- সৌরশিখা (Nano Flair )

কিরীটমন্ডলে তাপমাত্রা বৃদ্ধির একাধিক ব্যাখ্যা রয়েছে। তার মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য অণু- সৌরশিখা (Nano Flair)। ১৯৫২ সালে ইউজিন পার্কার ন্যানোফ্লেয়ার তত্ত্বে বলেছিলেন যে, সূর্যপৃষ্ঠে প্রতি মুহূর্তে রয়েছে কোটি কোটি ন্যানোফ্লেয়ার, যাদের এক একটি আকার ও আকৃতিতে সৌরশিখার ন্যানো পরিমাণ অর্থাৎ একশো কোটি একভাগ মাত্র। কিন্তু এরকম কোটি কোটি অণু-সৌরশিখা প্রতি মুহূর্তে সূর্যপৃষ্ঠ থেকে বর্ণমন্ডল ভেদ করে কিরীটমন্ডলে প্রবিষ্ট হচ্ছে বলে কিরীটমন্ডলের তাপমাত্রার এরকম বৃদ্ধি ঘটাচ্ছে।এই তত্ত্বের যথার্থতা যাচাই করবার জন্য মহাকাশে কিরীটমন্ডলের পথে ধেয়ে চলেছে পার্কার সোলার প্রোব।।


তপন কুমার বিশ্বাস

ফ্রি-ল্যান্স বিজ্ঞান লেখক